Advertisement

আজকের সম্পাদকীয়: কে করবে ঘুষ-চাঁদাবাজি বন্ধ?

আজকের সম্পাদকীয়: কে করবে ঘুষ-চাঁদাবাজি বন্ধ?

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে বিগত সরকার ব্যর্থ হয়েছে। বরং কোনো কোনো জায়গায় ছাড় দিয়ে দুর্নীতিকে আরও প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এখন নতুন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, অন্তবর্তীকালীন সরকার কি পারবে এ দেশ থেকে ঘুষ, চাঁদাবাজি বা অবৈধ লেনদেন বন্ধ করতে? আগের চাঁদাবাজেরা, যারা আওয়ামী ক্ষমতার দাপট প্রদর্শন করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করত, তারাও গা ঢাকা দিয়েছে। এই সুযোগে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে বিএনপির কিছু চাঁদাবাজেরা। চাঁদাবাজি চলছেই। এ ছাড়া কোনো পার্থক্য নেই। 

চাঁদাবাজির হাত থেকে নিস্তার পেতে চান ব্যবসায়ীরা। কেননা, তারা ব্যবসায়ীদের কখনো জিম্মি করে, আবার কখনো আটক করে চাঁদা আদায় করছে। অনেককে চাঁদার জন্য হুমকি দিচ্ছে ফোন করে। ভয়ে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। কেউ কেউ নাকি নীরবে চাঁদাবাজদের ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করছেন! ভয়ে মুখ খুলছেন না অনেকে। যে সুযোগে বিএনপির কর্মীদের উচিত ছিল জনগণের মন জিতে নেওয়া। কিন্তু কেউ কেউ আগেই চাঁদাবাজি শুরু করে আওয়ামী ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের মতো সেই একই রূপ দেখাচ্ছে। এছাড়াও ঘুষ, চাঁদাবাজি বা অবৈধ লেনদেনের সব সময় বড় অভিযোগ ওঠে তহশিল অফিস ও সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলোকে কেন্দ্র করে। উপজেলার তহশিল অফিসগুলোতে ভূমির খাজনা ও ভূমি নামজারিসহ এ-সংক্রান্ত অন্য কাজগুলো হয়ে থাকে। অন্যদিকে সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে জমির দলিলসহ সরকারি যেকোনো দলিল বা চুক্তিপত্র নিবন্ধন করা হয়। সরকারের রাজস্ব আদায়ের বড় উৎস এসব অফিস। 

কিন্তু অভিযোগ আছে, যত রাজস্ব এসব অফিস থেকে আদায় করা হয়, তার চেয়ে বহুগুণ অর্থ এখানে অবৈধভাবে লেনদেন হয়। এ নিয়ে সব সময় সংবাদমাধ্যমগুলো সরব থেকেছে। এরপরও দেশজুড়ে তহশিল ও সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে দুর্নীতির দৌরাত্ম্য কমেনি। অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও দিন শেষে পরিস্থিতি আগের জায়গায় গিয়েই ঠেকে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, তহশিল ও সাবরেজিস্ট্রি অফিসে সব ধরনের অবৈধ লেনদেন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। 

এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা কর্মকর্তাকে যথাযথ জবাবদিহির আওতায় আনা হোক। পাশাপাশি মানুষ যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে, সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে পুলিশসহ সব বাহিনীকে। বিচার বিভাগও যেন বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে বিদায় দেয়। তবেই না ভয়কে জয় করে অন্যায়-অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারবে জনসাধারণ। মানুষের ভীতি যেহেতু একবার গেছে, সেহেতু সেটাকে আর ফিরতে দেওয়া যাবে না। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বলিষ্ঠ না হলে একদিন এই চাঁদাবাজিই হাজার কোটি টাকার দুর্নীতিতে রূপান্তরিত হবে আবার। ফলে আমরা চাই, ব্যবসাক্ষেত্রে এই অরাজকতা বন্ধ হোক ও চাঁদাবাজদের শাস্তি দেওয়া হোক। সুশাসন ফিরে আসুক দ্রুত।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now