রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনসহ ১,২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংঘর্ষে ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক নেতাকে হত্যার অভিযোগে সাবেক সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনসহ ১,২৫০ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার রাত সোয়া ১১টার দিকে রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় নিহত রায়হান আলীর ভাই রানা ইসলাম এই মামলাটি দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন থানার ওসি এস এম মাসুদ পারভেজ।
নিহত রায়হান আলী (২৭) রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পুঠিয়া উপজেলার মঙ্গলপাড়া গ্রামের মুসলেম আলীর ছেলে ছিলেন। রাজশাহী কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্স পাস করা রায়হান ৫ অগাস্ট বেলা সোয়া ১টার দিকে নগরীর সাগরপাড়া কল্পনা হল মোড়ে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ অগাস্ট সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
মামলায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ১,২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ৫ অগাস্ট আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সাহেববাজারের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ও ডাবলু সরকারের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের উপর গুলি চালায়। এতে মারুফ মর্তুজা, ইব্রাহীম আলী, মারুফ আল হাসান, মেহেদী হাসানসহ অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। রায়হান আলী তাদের উদ্ধার করতে এগিয়ে গেলে যুবলীগ নেতা জহিরুল হক রুবেল তাকে মাথায় গুলি করেন, যার ফলে তিনি মারা যান।
ওসি এস এম মাসুদ পারভেজ জানিয়েছেন, মামলায় সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ছাড়াও আটজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ উল্লেখযোগ্য আসামির মধ্যে আছেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাজীব, রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্ত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ আল গালিবসহ আরও অনেকে।
মামলা দায়েরের সময় রাজশাহী মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর আবু মোহাম্মাদ সেলিমসহ দলটির নেতাকর্মীরা থানায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, ঘটনার ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং মামলায় কাউকে হয়রানিমূলকভাবে আসামি করা হয়নি। পুলিশের প্রতি দ্রুত তদন্ত করে অভিযোগপত্র দাখিলের আহ্বান জানান তিনি।