Advertisement

মোহাম্মদ আককাস আলীর ৮ম আবিষ্কার (দুই বাংলার কাব্যগাঁথা ও গল্পকথা)

"দুই বাংলার কাব্যগাঁথা ও গল্পকথা"


টুঙ্গিপাড়ার ছেলে


গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম হয়েছিলো
নাম তাঁর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান;
নেত্তৃত্ব দিবার জন্য স্রষ্টা দিয়েছিলো সম্মান।
এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,
স্লোগানে মুখরিত বিশ্ব তাকিয়ে দেখেছিলো।
বীরের বেশে শীর উন্নত করে হাঁক দিলো
তোদের যা আছে তা নিয়ে মাঠে এসো
পাকিস্তানি হায়নাদের বিতাড়িত না করে
বাংলার দামাল ছেলেরা ফিরবে না ঘরে।

লাখো শহীদের রক্তে ভেজা পিচ্ছিল রাস্তা
মা বোনদের সম্ভ্র হারানো কষ্টের ব্যথা
ফিরে দিলো লাল সবুজের পতাকা।
স্বাধীনতা!স্বাধীনতা!স্বাধীনতা!
বিশ্বের দরবারে উড়লো লাল সবুজের পতাকা।
টুঙ্গিপাড়ার ছেলে,বন্ধু ভেবে ভালোবেসে
পাশে যাদের দিয়েছিলো ঠাঁই
তারাই নির্মম ভাবে করলো হত্যা।
টুঙ্গিপাড়ার সেই ছেলেটির মুখে বজ্রকন্ঠের ধ্বনি
বিশ্বের দরবারে আজও ভূমিকম্পের মতো শুনি।
যতদিন লাল সবুজের পতাকা উড়বে
 ততদিন সবার হৃদয়ে তুমি মিশে থাকবে।

বোঝলো না জাতি.

বঙ্গদেশেই জন্মেছো তুমি
কদর বোঝলো না এ জাতি,
দিয়েছিলে বুক ভরা ভালোবাসা
বুলেটের আঘাতে হত্যা করলো হতভাগারা।
জীবনের সবি বিলিয়ে দিয়েছিলে
বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে
 বিনিময়ে চাওনি কিছু তার,
তোমার তুলনা তুমি নিজেই;
তোমাকে নিয়ে আজও প্রহর গুনি
স্বপ্ন দেখি সেই দিনের।

তোমার দেশে ঘাতক খুনিদের ছেলেরা
বিলাসবহুল বাড়ি গাড়িতে ঘরে,
 পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে;
দিলে না জাতি মূল্য তোমায়
 এ'লজ্জার কথা রাখবো কোথায়।
শীর্ষ পদক পায় যতো সব চোর
জোচ্চুরিতেই সেরা,
হীরক খন্ড বুঝবে কি করে
কাঁচের মোড়কে যে ঘেরা।
নিজের জন্য কখনো ভাবোনি
ভেবেছো বাংলার জনতার জন্য
মরেও তুমি ধন্য ধন্য।

মুখোশের আড়ালে--

ভদ্র বেশি মুখোশধারী
দেখবো কত ভন্ডামি
করোনা আর এ'সমাজে নষ্টামি।
 ভদ্র বেশে মুখোশের আড়ালে
কত খেলবে মিথ্যে খেলা
শয়তানের সাথে কাটাস না সারাবেলা।

বাহিরে ফিটফাট ভিতরে ফাঁকা
মহাজ্ঞানী সেজে দিস্ তোর ব্যথা।
বদের হাড্ডি তোদের নাড়িভুঁড়ি
তোদের ধোঁকাবাজির সাথে
 শয়তানও ভয় পায় ছলচাতুরি করতে।

ঝোপ বুঝে কোপ মেরে
দিস্ তোরা বিষয়ের বড়ি ঢেলে;
আর কতদিন চলবে তোদের খেলা
মুখোশের আড়ালে মিথ্যাকে নিয়ে
সত্যের সাথে দেখাবি কত
ভেলকিবাজির মেলা।

ছড়ার মেলা --

১.মানুষ মানুষের জন্য
শয়তান শয়তানের জন্য
ভালোবাসা ভালোবাসার জন্য
তবে কেন এত লোভ-লালোসা
শয়তানের সাথে বসতবাড়ি
কেন গড়ে তোলো তোমরা।

২. আজ ওরা আমলা
কথা বলে বাংলা!
চেহারায় দেশি
ঘুষ খায় বেশি!
৩.মাদক সেবী সমাজের মধ্যমণি,
সুদখোর ঘুষখোর ওরা হলো চোখের মণি,
বিচারের নামে প্রহসনের ধ্বনি
কে তাড়াবে তাদের শুনি?
সংবাদকর্মী হয় যদি মাদক সেবী
 মাদকের সেল্টারকারী
কে শুনবে অভিযোগের বাণী?
৪.কার কাছে স্বপ্নগুলো বন্ধক রেখে
যাবো অজানার পথে
যদি ফিরতে না পারি
স্বপ্নগুলো পূরণ করো তোমরা সবে।
৫.হায়রে ভালোবাসা
মিথ্যে করিও না আশা
দুদিন পরে ভেঙ্গে যাবে বাসা,
সেদিন থাকবে না মুখের কথা।

হিংস্র প্রাণী---
গ্রাম গঞ্জ শহরে এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় ব্যস্ত মানব কুল। সবার হাতে এখন অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন। সারা বিশ্ব যেন তাদের হাতের মুঠে। ভূমিষ্ঠ শিশু থেকে শুরু করে নবীন প্রবীনেরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে। মোবাইল হচ্ছে একটা হিংস্র প্রাণী। যার নিত্যদিনের খাবার হচ্ছে মূল্যবান সময়। রাত জেগে যুবক-যুবতীরা শুধু নয়, অনেক আলীমেরাও মোবাইলের খাবার হিসাবে মূল্যবান সময় বাইপাস করছে। অন্ধকারের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে আলোকিত সমাজ।

দোষক্রটি---
সরদার সাহেব একজন প্রতিবাদী মানুষ। অন্যায়কারীর মুখের উপর প্রতিবাদ করতে সে দ্বিধাবোধ করতো না। প্রশাসন থেকে শুরু করে সকল স্তরের মানুষ জানতো সরদার সাহেব তোষামদি, চাটুকারিতা,দালালি পছন্দ করতো না বা ওইসব প্রকৃতির মানুষগুলোকে সে করতো। কোন অনুষ্ঠানে গিয়ে অনুষ্ঠানের ভূলক্রটি বা দোষক্রটি থাকলে আয়োজকদের মুখের উপর বলে দিতেন। তিনি দম্ভের সাথে বলতেন,যারা আমার দোষ ত্রুটি তুলে ধরেন আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ কারণ দোষ ত্রুটি না ধরলে আমি পরিপূর্ণ মানুষ হতে পারবো না।

কবি নজরুল----
অসহায় ও অভাগা কবি ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। তার চার বছরের শিশু বুলবুল যে রাতে মারা গিয়েছিলো সে রাতে তার পকেটে একটা কানাকড়িও ছিলো না। অথচ কাফন,দাফন,গাড়িতে করে দেহ নেওয়া ও গোরস্থানে জমি কেনার জন্য দরকার ১৫০ টাকা, সে সময়ের ১৫০ টাকা মানে অনেক টাকা। এত টাকা কোথায় পাবে। বিভিন্ন লাইব্রেরীতে লোক পাঠানো হল।কিন্তু টাকার তেমন ব্যবস্থা হয়নি। শুধুমাত্র ডি. এম লাইব্রেরি দিয়েছিল ৩৫ টাকা। আরো অনেক টাকা বাকি। ঘরে মৃত ছেলের মরা দেহ রেখে কবি গেলেন এক প্রকাশকের কাছে। প্রকাশক শর্ত দিলো এই মুহূর্তে কবিতা লিখে দিতে হবে। তারপর টাকা.....।
কবি মনের নীরব কান্না, যাতনা লিখে দিলেন কবিতায়.....

ঘুমিয়ে গেছে শ্রান্ত হ’য়ে আমার গানের বুলবুলি –
করুণ চোখে চেয়ে আছে সাঁঝের ঝরা ফুলগুলি।।
ফুল ফুটিয়ে ভোর বেলাতে গান গেয়ে
নীরব হ’ল কোন নিষাদের বান খেয়ে;
বনের কোলে বিলাপ করে সন্ধ্যা–রাণী চুল খুলি’।।
কাল হ’তে আর ফুটবে না হায় লতার বুকে মঞ্জরী,
উঠছে পাতায় পাতায় কাহার করুণ নিশাস্‌ মর্মরি’।
গানের পাখি গেছে উড়ে, শূন্য নীড় –
কণ্ঠে আমার নাই যে আগের কথার ভীড়
আলেয়ার এ আলোতে আর আসবে না কেউ কূল ভুলি’।।
একজন সন্তানহারা পিতার কি নিদারুণ কষ্ট। যদিও এই মানুষটাই বাংলা সাহিত্যকে অনেক কিছু দিয়েছেন। দেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন, জেল খেটেছেন স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে দাঁড়িয়ে। কিন্তু হঠাৎ করে সেই মানুষটার পিছন থেকে সবাই সরে গেলো। ইতিহাস ধিক্কার দিলো সেই সব স্বার্থলোভী মানুষদের। যুগে যুগে চলছে স্বার্থবাদীদের স্বার্থলোভী অত্যাচার আর জুলুম।

ঘুষখোরের স্ত্রী---

ঘুষ লেনদেনের সাথে জড়িত থাকায় একজন উর্ধতন কর্মকর্তা গ্রেফতার হলেন। সাথে তাঁর স্ত্রী। এসময় তাঁদের সম্পদের তদন্ত করা হচ্ছিলো। দায়িত্ব প্রাপ্ত টাস্ক ফোর্সের সদস্য ভদ্রমহিলাকে জিজ্ঞেসা করলো,এ বিপুল সম্পদ জোগাড়ের উৎস সম্পর্কে আপনার কিছু বলার আছে?তিনি উত্তর দিলেন, আমার হ্যাজবেন্ডকে জিজ্ঞেস করুন। তাঁকে আপনারা জেলে দিন, ফাঁসি দিন, কিন্তু আমাকে নিয়ে টানাটানি করছেন কেন?
কথা শেষ না হওয়ার আগেই ঘুষখোরের স্ত্রী বললেন, আমি তাঁকে বলিনি চুরি করে আমাকে সম্পদ বানিয়ে দিতে। সে দিয়েছে,আমি এনজয় করেছি। আমার কী দোষ? তাঁকে শাস্তি দিন, আমাকে নয়। তাঁর পাপের শাস্তি আমাকে কেন দেবেন?


দুই বাংলার কাব্যগাঁথা ও গল্পকথা

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now