গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি দুধের দাম লোকসানের মুখে খামারিরা
গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি দুধের দাম। ফলে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছে দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারিরা। খাদ্যশস্য, পশুখাদ্য, বিদ্যুৎ এবং শ্রমিকের মজুরিসহ বিভিন্ন খাতে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেলেও দুধের দাম স্থবির রয়ে গেছে। এর ফলে লোকসানের মুখে পড়েছে ছোট ও মাঝারি খামারিরা।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, গত এক বছরে পশুখাদ্যের দাম প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত, ভুসি, খৈল, ফিড ও দানাদার খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি খামারিদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য মতে, নওগাঁ জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামারি রয়েছে ২৫ হাজার ৯৫৭ জন। যেখানে গরুর সংখ্যা ১ লাখ ৭ হাজার ৮২৮টি। গত ২৩-২৪ অর্থ বছরে দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৪৩ হাজার টন এবং উৎপাদন হয়েছে ৪ লাখ ৪৫ হাজার টন। ২৪-২৫ অর্থবছরে দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার টন। ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার টন।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ভুসি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, খৈল বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা ফিড ৫৫ টাকা যা গতবছরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। গতবছর ভুসি বিক্রি হয়েছিল ৩০-৩২ টাকায়, খৈল ৩৮-৪০ টাকায় এবং ফিড ৪০-৪২ টাকায়।
সাপাহার উপজেলার আরেক প্রান্তিক খামারি রমজান আলী, তিনি বলেন, তিনটি গরু রয়েছে এখন তিনটি থেকেই দুধ পাই। প্রতিদিন তিনটি গরু থেকে ৬০ লিটারের মতো দুধ হয়। প্রতি লিটার দুধ ৫০ টাকা করে বিক্রি করেছি গোয়ালের কাছে। তিনটি গরুর পেছনে খরচ প্রায় ২ হাজার টাকার বেশি হয়। আগে খাবারের দাম কম ছিল তখন কিছুটা আয় হতো। গত এক বছরে প্রায় প্রতিটি খাবারের দাম কেজিতে প্রায় ১৫ - ২০ টাকা করে বেড়েছে, সেই তুলনায় দুধের দাম বাড়েনি বরং আগের থেকেও এখন কম দামে দুধ বিক্রি করতে হয়। আগে ৮০-৯০ টাকা করে দুধ বিক্রি করেছি এখন ৫৫-৬০ টাকা এর চেয়ে আর বেশি হয় না।
জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতি কেজি দুধ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। পানির দামে দুধ বিক্রি এমনই অভিযোগ খামারিদের।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুর রহমান জানান, এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় মোট ৯৫ ডেইরি পিজি (প্রডিউসার গ্রুপ) অর্থাৎ উপজেলা পর্যায়ে প্রান্তিক খামারিদের নিয়ে এই গ্রুপগুলো গঠন করা হয়েছে। নওগাঁতে ফন্টেরা ডেইরি হাব ২০টি ভিএমসিসি এর মাধ্যমে প্রান্তিক খামারিদের দুধ যৌক্তিক মূল্যে সংগ্রহ করে তা ভেলু অ্যাড পূর্বক বাজারজাত করবে। ফলে খামারিরা দুধ বিক্রির বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পাওয়ার পাশাপাশি দুধের যৌক্তিক মূল্য পাবে।